আবিদ হাসান, রামপাল, বাগেরহাট।
পৃথিবীর সব গল্প আলো দিয়ে শুরু হয় না। কিছু গল্প শুরু হয় অন্ধকার দিয়ে,নীরব এক কান্না দিয়ে।
এমনই একটি গল্প রচিত হয়েছিল বাগেরহাট জেলার রামপালের দুটি গ্রামে,রনসেন আর শ্রীকলসে।
রনসেন গ্রামের শিশু সামাদ, বয়স মাত্র ১১। শ্রীকলস গ্রামের রাব্বি, বয়স ১৩।
তারা তখন ছিল জীবনের ভুল পথেএক ভয়ংকর অভ্যাসের হাতে বন্দি।
বিড়ি-সিগারেট তাদের ছোট হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল এক ধোঁয়াটে ভবিষ্যৎ।
চারপাশের উদাসীনতা আর দিকহীনতার মাঝে তারা হারিয়ে ফেলছিল নিজেদের স্বপ্ন, সম্ভাবনা আর শৈশব।
কিন্তু এই গল্পের মোড় ঘোরানো শুরু হয় তখন,
যখন আবিদ হাসান নামের এক তরুণ স্বপ্নবান শিশু তাদের জীবনের পাশে এসে দাঁড়ানএকজন বন্ধু, পথপ্রদর্শক এবং আশার আলো হয়ে।
তিনি ছিলেন এক নির্মাতা শিশুদের ভবিষ্যৎ নির্মাণের।
তিনি বিশ্বাস করেন,কোনো শিশুই জন্ম থেকে খারাপ নয়। সময় আর সঠিক সাথীই তাকে বদলে দিতে পারে।
আবিদ হাসান শিশুদের কাছে যান, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেনএকজন অভিভাবকের মতো, একজন বন্ধুর মতো। তাদের অভিবাবকদের সাথে কথা বলেন।
তিনি তাদের ভেতরের ঘুমন্ত স্বপ্নগুলোকে জাগিয়ে তোলেন, সাহস দেন নতুন করে শুরু করার।
শ্রীকলস ইম্প্যাক্ট প্লাস ক্লাবের সব সদস্য মিলে গড়ে তোলেন ভালোবাসা ও সহানুভূতির এক বৃত্ত।
দিনের পর দিন ধৈর্য আর ভালোবাসা দিয়ে কাজ করতে করতে,
এক সময় সেই অন্ধকার ভেদ করে আলো ফিরে আসে।
সামাদ আর রাব্বি নিজেদের ভেঙে নতুন করে গড়তে শেখে।
আজ তারা শুধুই সিগারেট থেকে সরে আসেনি,
তারা ফিরেছে জীবনের দিকে, স্বপ্নের দিকে, আশার দিকে।
সামাদ এখন বলে, “আমি একদিন ডাক্তার হবো। গ্রামের অসুস্থ মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেব।”
রাব্বি জানায়, “আমি হবো শিক্ষক, শিশুদের আলো শেখাবো, যেন কেউ আর পথ হারিয়ে না ফেলে।”
এখন তারা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ পরিচালিত রামপাল এরিয়া প্রোগ্রাম এর শ্রীকলস ইম্প্যাক্ট প্লাস ক্লাব,এর গর্বিত সদস্য।
তারা শুধু নিজেদের নয়, আশপাশের অন্য শিশুদেরও বুঝায়
“নেশা নয়, জ্ঞানই জীবন। ধোঁয়া নয়, স্বপ্নই শক্তি।”
এই গল্প একরকম নয়এটি প্রমাণ করে,
যদি একজন মানুষ হৃদয় দিয়ে চায়, তবে সে বদলে দিতে পারে হাজারো জীবন।
সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: আহমেদ হোসাইন ছানু। উপদেষ্টা সম্পাদক: মোঃ রহমত আলী। উপদেষ্টা: মোঃ জাবেদুল ইসলাম। সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ রেজন মিয়া। কার্যালয়: উত্তর উল্যা, ভরতখালী, সাঘাটা, গাইবান্ধা। মোবাইল: 01701368008।
স্বত্ব সংরক্ষিত - ২০২৫