ইসলামী ব্যাংকিং একটি শরিয়াভিত্তিক আর্থিক ব্যবস্থা, যা সুদ (রিবা) নিষিদ্ধ করে ন্যায়ভিত্তিক ও অংশীদারিত্বমূলক আর্থিক কার্যক্রমে উৎসাহিত করে। বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (IBBL) এই ধারার অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান। ১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করার পর থেকে এই ব্যাংক শুধুমাত্র ব্যবসায়িক নয়, সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডেও অসাধারণ অবদান রেখে চলেছে। ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোগে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, গরিব-দুস্থদের মাঝে খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা বিতরণ, কৃষকদের মাঝে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং যুব উদ্যোক্তাদের জন্য শরিয়াহসম্মত বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এসব কার্যক্রম বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
তবে শুধু বাংলাদেশেই নয়, ইসলামিক ব্যাংকিং ধারণাটি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকার অনেক দেশেই ইসলামী ব্যাংক সফলভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ভারতে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের অবস্থা
ভারতে এখনো ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতি সরকারি অনুমোদন না পাওয়ায় পূর্ণাঙ্গ শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকিং চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে কিছু সহযোগিতামূলক (Co-operative) ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (NBFC) শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা দেয়ার চেষ্টা করছে। যেমন:
Al-Khair Co-operative Credit Society Ltd. – মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
Baitun Nasr Co-operative Society – মুম্বাইসহ কিছু অঞ্চলে শরিয়াহভিত্তিক ঋণ প্রদান করে থাকে।
Zadco Credit Co-operative Society – শরিয়াহ সম্মত বিনিয়োগসেবা প্রদান করছে।
এই প্রতিষ্ঠানগুলো সীমিত পরিসরে হলেও ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের চেতনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী ইসলামিক ব্যাংকগুলোর নাম যা অনুসরণযোগ্য:
Al Rajhi Bank – সৌদি আরব
Dubai Islamic Bank – সংযুক্ত আরব আমিরাত
Kuwait Finance House – কুয়েত
Meezan Bank – পাকিস্তান
Bank Islam Malaysia Berhad – মালয়েশিয়া
Qatar Islamic Bank – কাতার
এই ব্যাংকগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের মডেল হিসেবে ব্যাপক স্বীকৃতি পেয়েছে।
উপসংহার:
ইসলামী ব্যাংক শুধু একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয়; এটি একটি ন্যায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রতীক। বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকের সাফল্য প্রমাণ করে, সঠিকভাবে পরিচালিত হলে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকিং সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও নৈতিক ব্যবসায়িক পরিবেশ গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। ভারতে ও অন্যান্য দেশে এই ব্যবস্থা সম্প্রসারণের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভবিষ্যতে একটি মানবিক অর্থনীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
ভারত আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার বদরপুর এবং এংলার বাজার ছামলা গ্রাম।
সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: আহমেদ হোসাইন ছানু। উপদেষ্টা সম্পাদক: মোঃ রহমত আলী। উপদেষ্টা: মোঃ জাবেদুল ইসলাম। সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ রেজন মিয়া। কার্যালয়: উত্তর উল্যা, ভরতখালী, সাঘাটা, গাইবান্ধা, বাংলাদেশ। মোবাইল: 017013680087