কলমে: রোজিনা খাতুন
সত্যি সেদিন আমি খুব অবাক হয়েছি
যেদিন মায়ের চোখে প্রথম ভয় দেখেছি।
মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগে-
সেদিন ভোর হবার আগে –
পাশের ঘরে মা আর বোনের আর্তনাদ
কেঁদেছে দুজন সারাটা রাত।
আজও কারণ খুঁজে পাইনি
মা বোন তার পরে কোনদিনও হাসেনি।
চারিদিকে নিশ্তব্দ শুনশান পরিবেশ
শকুনির পাহারা দেয়ালের ওপাশ।
সুযোগ পাইলেই ঝাপিয়ে পড়ে
মা আর বোনের ইজ্জতের উপরে।
বোনটা হঠাৎ করেই মরে গেলো
অমানবিক নির্যাতনে জীবন দিলো।
বাবা সে কবেই যুদ্ধে গেছে
জানিনা বেঁচে নাকি মরে গেছে।
আবার ভাবছি বাবা আর ভাই বেঁচে আছে তো?
নাকি গুলির জোয়ারে ছারখার দেহজোড়া?
পেটের ক্ষুধায় গড়াগড়ি করি-
মা কিচ্ছুটি বলে না,শুধু কাঁদে
হাঁড়ির মধ্যে শুধু পানি রাঁধে।
মায়ের মুখের কথা কতদিন শুনি না
কতদিন হয়ে গেলো গল্প বুনিনা।
দশ বছর বয়সেও আমি সব বুঝি
তবুও মন খারাপের কারণ খুঁজি।
যুদ্ধের শেষে চারিদিকে জয়ের মিছিল
স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ।
ভাইয়ের হাতে পতাকা উড়ে
ফিরে এসেছে আপন নিড়ে।
মা দুফোঁটা অশ্রু মুছে
ভাইকে বুকে জড়িয়ে বলে-
তোর বাবা বুঝি শহিদ হয়েছে?
দুঃখ করিনা জীবনের বিনিময়ে দেশ পেয়েছি –
ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি –
তোদের বাবা বেঁচে থাকবে পতাকা হয়ে
উড়বে চিরকাল নীলদিগন্তে।