• মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন

গল্প: আমাদের নির্বুদ্ধিতায় নমরূদ-ফেরাউন হয়ে ওঠেন ইশ্বর

সাবিত রিজওয়ান / ৬০ Time View
Update : শনিবার, ১০ মে, ২০২৫

লেখক: নাসরিন ইসলাম

মনুষ্যরূপী একজন অমানুষ এর প্রতীকী তৈরী করে ফাঁসি দেয়া, জুতা পেটা করা, পদদলিত করা বা ভস্মীভূত করার মধ্যে অহেতুক কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি? হতে পারে সে পুরুষ, হতে পারে সে নারী! এই ধরণের কর্ম বাস্তবায়ন হলো অসামাজিক ঘৃণিত কর্মকাণ্ড চিহ্নিত করে জনগন কে অবহিত করা এবং বিরত থাকার আহবান।

অপরাধ যেই সংঘটিত করে থাকুন না কেনো, সেই অপরাধী। তাকে আমরা আমাদের বাবা-মা এর অবস্থানে বসিয়ে অপরাধী কে হিংস্র জংলী পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের দিকে অনুপ্রাণিত করা বিনা আর কিছুই নয়। এক পর্যায়ে আমাদের এই নির্বুদ্ধিতার জন্য তারা হয়ে ওঠেন নমরূদ ফেরাউন। এই নমরূদ ফেরাউন মনুষ্য জাতির অতি তেলবাজিতে একদা নিজেদের “মহান আল্লাহ” হিসেবে ভেবে বসেছিলেন।

এই যে বসুন্ধরা হতে দু’জন নারী কে পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে পুলিশ ধরে নিয়ে গেলো… এদের কে একটি দল, গোষ্ঠী বা সাধারণ জনগন ঘৃণা ভরে যদি প্রত্যাখ্যান করে এবং তাদের প্রতীকী তৈরী করে জুতা পেটা করে থাকে! তাহলে কি আমরা বলবো, আহা রে মায়ের জাত কে অপমান! এটা হলো আমার গর্ভধারিণী মায়ের অপমান?

বরং আমাদের মা-বাবা কে এমন বর্বর অসভ্য জানোয়ার এর ভাবনার আদলে ভাবা মানে, তাদের অস্তিত্ব সত্তা কে অপমানিত করা! বরগুনার মিন্নী যা করেছিলো, তা কি আপনার আমার মা করেন? আমরা কি মনে করি যে, এই সকল বদমাস জংলী বর্বর নারীরা, নারী নামের কলঙ্ক! তবে কেনো আজ মিছে আহাজারিতে নিজের মা কে নষ্ট পথভ্রষ্ট মানুষরূপী কীটের সাথে তুলনা করে চলেছি! আশ্চর্য!

যদি আমরা এই ভয়ঙ্কর রূপী নারীদের মাঝে নিজেদের মায়েদের রূপ খুঁজে পাই। তাহলে চিৎকার করুন গলা ফাঁটিয়ে—- আমরা খুঁজে পাবো অনায়াসেই আরো কিছু রক্তপিপাসু নষ্ট পথভ্রষ্ট মা কে। আর যদি আমাদের মা এমন রক্তপিপাসু মানুষখেকো না হয়ে থাকেন। কিন্তু সন্তান রা এহেন মনুষ্যরূপী কীট কে নিজের মায়ের আসনে বসিয়ে ক্রন্দনে আকাশ-পাতাল ভারী করে তোলেন।

তাহলে অকৃতজ্ঞ কিছু সন্তান এই পৃথিবী দেখবেন। যে সন্তান নিজের গর্ভধারীনি মা কে নিজের অজান্তেই কলুষিত করছে—- নরপিশাচদের সাথে নিজের বিবেকবান মা কে মিলিয়ে ফেলছেন——– এমন মানুষ খেকো রক্তপিপাসু বা বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত মানুষগুলোর অন্যায় কে, অন্যায় না বলে মায়া কান্না করে পরোক্ষভাবে উদ্ধুদ্ধ করছি।

অতঃপর শীঘ্রই ছেয়ে যাবে পৃথিবীর অলি-গলি আলপথ নীতিহীন উদ্ভট চরিত্রের মানুষে এবং এরাই একদিন আপনার আমার সভ্য নীতিবান সন্তানদের অনৈতিক কার্যকলাপে ফাঁদ পেতে নিয়ে যাবে। আর যদি ফাঁদে পা ফেলাতে না পারে তবে জোরপূর্বক নিয়ে যাবে নতুবা প্রাণের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে—! ফেরাউন এর মত চিৎকার করে বলবে, আমি খোদা আমি ঈশ্বর দেখ তোর প্রাণ আমি নিয়ে নিচ্ছি। এই বলে হুকুম দিবে মেরে ফেলার নতুবা নিজ হস্তে গর্দান কেটে নিবে।

আর আমি আপনি বলবো হায় আল্লাহ সারাজনম আপনার ইবাদত বন্দেগী করে এমন শাস্তি কেনো আমায় দিলেন! তখন ভাববেন না একবারও? ” নিজেই খাল কেটে কুমির নিয়ে আসছিলেন”

ইজ্জত এত ঠুনকো নয়, নিজেদের সাথে সাথে নিজেদের পবিত্র বিবেকবান সৎ নির্ভীক ন্যায়ের পথে অটল সত্তা মা-বাবা কে অপমান করছেন নিজেরাই—- তা কি ভেবে দেখেছি আমরা একবারও?- মায়ের চেয়ে মাসীর ভালোবাসা বেশী হয়ে যাচ্ছে না?

ভেবে দেখেছেন কি? আমাদের সস্তা আবেগ, অপরিপক্ক বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ তাদের স্বার্থ হাসিল করছে ——বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি তে।

কিন্তু আমরা কেনো ভাবছি না একবারও যে, তাদের উস্কানীমূলক মন্তব্যে পা দিয়ে নিজের অস্তিত্ব বিলীন করছি নাতো? মায়া-মমত্ব ভালোবাসা বিনা পৃথিবী অচল। তথাপি সেই ভালোবাসা যেনো আমাদের অন্ধ না করে ফেলে—– তাহলে আপনি আমি সেই ভালোবাসার মানুষ টি কে, অমানুষে রূপান্তর করছি। ঢেকে দিচ্ছি নিঁকশ কালো বিভৎসতায় ইচ্ছে-অনিচ্ছায়, জেনে বা অজান্তেই অবিবেচক এর মত!

নিজের বুদ্ধি বিবেচনা কে কাজে লাগানো উচিৎ। কিছু শুনলে দেখলে লাফ দিয়ে না পড়ে, আগে যাচাই-বাছাই করুন্। চোখের সব দেখা যেমন সত্য নয়, তেমনি সব শোনাও সত্য নাও হতে পারে। কান নিয়েছে চিলে——– অমনি ভোঁদৌড় কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছে পিছে।

কালো কে কালো আর আলো কে আলো বলতে শিখি আমরা—— নইলে আমাদের নির্বুদ্ধিতার জন্য আমাদের সকল ভালো কাজগুলো হারিয়ে যাবে একটি কালো সামিয়ানায়—-

” হে প্রভূ আমাদের সহায় হোন, হেফাজত করুন” আমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আমিন

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
bdit.com.bd