নিজস্ব প্রতিবেদক
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস চলে গেলে জাতি ব্যর্থ আর বিপ্লবীরা কলঙ্কিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ।
আজ শনিবার (২৪ মে) রাজধানীতে ‘গণমুক্তি জোট’-এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মুহাম্মদ ইউনূস পুরো জাতিকে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছেন উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ বলেন, ‘সংস্কারই বলুন অথবা নির্বাচন, দায়িত্ব যেহেতু প্রফেসর ইউনুস নিয়েছেনই, সেহেতু তা সমাপ্ত করেই জনগণের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মাঝপথে যদি ড. ইউনুস সব ছেড়ে চলে যান, তবে জাতি হবে ব্যর্থ আর বিপ্লবীরা কলঙ্কিত। তার জন্য পদত্যাগ কোনো বিকল্প নয়, বরং নেতৃত্ব দিয়ে যাওয়াই একমাত্র পথ। পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত দেশকে দৃঢ়, কার্যকর ও সুচিন্তিতভাবে নেতৃত্ব দেওয়াই তার একমাত্র দায়িত্ব এবং পুরো জাতি এর জন্য তার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। জাতীয় সংলাপের মাধ্যমেই যেকোনো রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর আরো সহনশীল আচরণ করার প্রয়োজন রয়েছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে ফ্যাসিবাদের দোসর ও বিভাজন সৃষ্টিকারী রয়েছে মন্তব্য করে শাহরিয়ার ইফতিকার ফুয়াদ বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা ড. ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপচেষ্টা করছে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী শিবিরে হানাহানি বিভক্তি বিভাজন ও দোষারোপের রাজনীতি ভর করছে। কিছু উপদেষ্টা বিভাজন তৈরিতে মদদ যুগিয়েছে। তাই উপদেষ্টা পরিষদে সংস্কার এনে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের রাজপথের যোগ্য ব্যক্তিত্বদের নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার পুনর্গঠন করা সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।’
শাহরিয়ার ইফতেখার বলেন, ‘কথায় কথায় যমুনা ঘেরাও অথবা রাস্তাঘাট বন্ধ করে ব্যারিকেড দেওয়ার কর্মসূচি জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।’
‘ক্যাবিনেটকে আরও গতিশীল হতে হবে। সরকারকে আরও বেশি ফাংশনাল হতে হবে, উপদেষ্টাদের আরও বেশি কাজ
ডক্টর ফুয়াদ বলেন, সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের বর্তমান পরি¯ি’তিতে অন্তর্বর্তী সরকার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিলে ভালো কিছু বের হয়ে আসবে। জাতির মধ্যে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে তা সব পক্ষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সমাধান সম্ভব।
তিুনি আরো বলেন, বিগত সরকারের কর্মকাণ্ডে নির্বাচন সম্পর্কে মানুষের একটা অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনকে অর্থবহ করতে হলে গ্রহণযোগ্য সংস্কার প্রয়োজন, যদিও এখন পর্যন্ত এর কোনো রোডম্যাপ জনগণের সামনে আসেনি। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করবে। জুলাই আন্দোলনে হত্যা ও গুমের অপরাধীদের বিচার না হলে বাংলাদেশ গভীর অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ফেয়ারভাবে একটা বিচার চান ডক্টর ফুয়াদ।
তিনি জানান, মৌলিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাই হল গণমুক্তি জোটের প্রধান লক্ষ্য।
তাই প্রফেসর ইউনুসের কাছে আবেদন রইল যে তিনি যাতে অবিলম্বে ছোট বড় সকল রাজনৈতিক দলকে একত্র করে জাতীয় স্বার্থে জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান বের করে নিয়ে আসেন। এরপর ড.শাহরিয়ার সকলকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনের সমাপ্তী ঘোষণা করেন।