স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশ সাপোটার্স ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা, রাষ্ট্র চিন্তক বিদ্রোহী দ্যা নজরুল সেন্টার এর উপদেষ্টা ও গবেষক আমেরিকা প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধা ক্লিন্টন হাওলাদার পাভেল বলেছেন, ‘সাম্য, মানবতা, প্রেম ও প্রকৃতির কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর বর্ণাঢ্য জীবন ও সৃজনশীল কর্ম জাতির অন্তহীন প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কবির কবিতা গান মুক্তিকামী মানুষকে প্রেরণা যুগিয়েছে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে কবি কাজী নজরুল ইসলামের অবদান স্বাতন্ত্র্য মহিমায় সমুজ্জ্বল। নজরুল অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন।’
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (২৪ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণীতে তিনি আরো বলেন, ‘কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। “বিদ্রোহী থেকেই বিদ্রোহ” বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন হতে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে নজরুলের বাণী, কবিতা ও গান শুধু অনুপ্রেরণা যোগায় নি, বরং মনে হয়েছিল নজরুল আন্দোলনে সরাসরি সামনে সারিতে এসে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদের আজকের যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, সেই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন সর্বপ্রথম দেখেছিলেন, কাজী নজরুল ইসলাম তার অসাধারণ দেশাত্মবোধক গান, কবিতা, প্রবন্ধ দিয়ে পুরো বাঙালি জাতিকেও স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। নজরুলময় এ বাংলাদেশে সব স্বপ্নের সম্ভাবনাকে সফল করতে ঐক্যবদ্ধ হতে চাই।’
হাওলাদার পাভেল বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম হলেন বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। প্রতি বছর তাঁর জন্মজয়ন্তী গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে উদযাপন করা হয়। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯৯ সালের ২৪ মে বাংলার ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে। ছোটবেলা থেকেই নজরুল ছিলেন অসম্ভব মেধাবী ও সংগ্রামী। তিনি যেমন ছিলেন এক অসামান্য কবি, তেমনি ছিলেন সংগীতজ্ঞ, নাট্যকার, উপন্যাসিক ও একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনাসম্পন্ন মানুষ।’
তিনি আরো বলেন, ‘নজরুলের জন্মজয়ন্তী কেবল একটি স্মরণ দিবস নয়, এটি আমাদের জন্য এক প্রেরণার উৎস। এ দিনে স্কুল-কলেজসহ নানা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান তাঁকে স্মরণ করে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। কবিতা আবৃত্তি, গান, নাটক, আলোচনা সভা ও রচনা প্রতিযোগিতা- সব মিলিয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।’
হাওলাদার পাভেল বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা সাহিত্য তথা কাব্যে প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার বিকাশ ঘটান। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য। দুই বাংলাতেই (পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ) তাঁর কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়। তাঁর কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সাহিত্য-সম্পাদক, রাজনীতিবিদ ও সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার।’
তিনি আরো বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলামকে ‘বিদ্রোহী কবি’ বলা হয় তাঁর অগ্নিঝরা লেখনির জন্য। তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ছিলেন এক সাহসী কণ্ঠস্বর। তাঁর গান ও কবিতা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে যেমন সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি সমাজের নিপীড়িত, শোষিত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে। তিনি হিন্দু-মুসলিম একতার প্রতীক ছিলেন। তাঁর লেখা ইসলামী সংগীত ও গজল যেমন জনপ্রিয়, তেমনি শ্যামাসংগীতও সমানভাবে সমাদৃত। আজ আমরা কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তীর গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী ও শুভেচ্ছা জানাই। বাংলাদেশ হোক জাতীয় কবির চেতনায় সব ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বশেষে সম্প্রীতি ও সাম্যের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ।’