আবিদ হাসান
বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে রামপাল উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হলো এক হৃদয়গ্রাহী ও অর্থবহ আলোচনা সভা। এই মহৎ আয়োজনটি করে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ-এর রামপাল এরিয়া প্রোগ্রাম এবং এতে সহযোগিতা করে রামপাল উপজেলা প্রশাসন। দিনটি ছিল শুধু একটি কর্মসূচি নয়, বরং শিশুদের অধিকার নিয়ে সমাজের প্রত্যেক স্তরের মানুষকে একত্রিত হওয়ার এক শক্তিশালী মঞ্চ।
সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জনাব শাহিন রহমান, সমাজসেবা কর্মকর্তা, রামপাল উপজেলা।
উপস্থিত ছিলেন জনাব লিটন মন্ডল, সিনিয়র ম্যানেজর, রামপাল এরিয়া কো অর্ডিনেশন অফিস।
উপস্থিত ছিলেন জনাব পল্টন বিশ্বাস, শিশু সুরক্ষা কর্মকর্তা, রামপাল এপি।
আলোচনা সভার শুরুতেই বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসের তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন জনাব লিটন মন্ডল, সিনিয়র ম্যানেজর। ওন্যান্য বক্তারা জানান, শিশুশ্রম একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি, যা শিশুদের মৌলিক অধিকার, নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ কেড়ে নেয়। তাদের মতে, একজন শিশুকে স্কুলব্যাগের বদলে ইটের ভাঁজে বা দোকানে কাজে পাঠানো শুধু অন্যায় নয়, বর্বরতাও বটে।
সমাজসেবা কর্মকর্তা জনাব শাহিন রহমান, যিনি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলেন,“সরকার, ওয়ার্ল্ড ভিশন এবং সব অংশীজনের সম্মিলিত চেষ্টায় রামপাল উপজেলাকে খুব শীঘ্রই শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করা হবে।” তিনি আরও জানান, প্রশাসন শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জনাব লিটন মন্ডল, সিনিয়র ম্যানেজার, রামপাল এরিয়া কো-অর্ডিনেশন অফিস। তিনি অত্যন্ত আন্তরিক কণ্ঠে বলেন, “ওয়ার্ল্ড ভিশন দীর্ঘদিন ধরে শিশুশ্রম প্রতিরোধে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিবারকে সহায়তা প্রদান এবং ঝরে পড়া শিশুদের পুনরায় বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে আমরা একটি শিশুবান্ধব সমাজ গড়ে তুলতে কাজ করছি।”
জনাব পল্টন বিশ্বাস, শিশু সুরক্ষা কর্মকর্তা তাঁর বক্তব্যে বলেন, “শিশুরা কোনোভাবেই শ্রমের বস্তু নয়, তারা জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের স্বপ্ন দেখার অধিকারকে কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলা মানেই পুরো জাতির স্বপ্নকে কেটে ফেলা।”
অনুষ্ঠানে শিশু ও যুব ফোরামের পক্ষ থেকে বক্তব্যে জানানো হয় যে, তাদের উদ্যোগে চারজন ঝরে পড়া শিশুকে আবারও স্কুলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। উপস্থিত অতিথিরা যখন শুনলেন যে ওয়ার্ল্ড ভিশন এই শিশুদের শিক্ষা সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করেছে, তখন করতালিতে ভরে যায় অডিটোরিয়াম। এই উদ্যোগ যেন এক আশার প্রদীপ হয়ে উঠেছিল সকলের মাঝে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শিশু ও যুব ফোরাম উপদেষ্টা পরিষদের সম্পাদক আকাশ মজুমদার এবং রামপাল উপজেলা শিশু ফোরামের সম্পাদক ও যুব ফোরামের সভাপতি, যাঁরা এক কণ্ঠে বলেন “এই সমাজ আমাদের, এই শিশুরাও আমাদের। এদের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্বও আমাদেরই।”
অনুষ্ঠানে স্থানীয় ধর্মীয় প্রতিনিধি, স্কুল শিক্ষক ও সচেতন পিতা-মাতারাও অংশগ্রহণ করেন। তাদের সক্রিয় উপস্থিতি ও মতামত অনুষ্ঠানে একটি সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দেয় শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ শৈশব নিশ্চিত করতে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ যদি এগিয়ে আসে, তাহলে শিশুশ্রমের মতো অভিশাপ আর টিকে থাকতে পারবে না।
সকলে একসঙ্গে অঙ্গীকার করেন,,,"আমরা শিশুশ্রম বন্ধ করব, আমরা প্রতিটি শিশুকে ভালোবাসব, আমরা তাদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ব।"
এই অঙ্গীকার শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, তা ছিল একটি মানবিক দায়িত্ববোধের জ্বলন্ত শপথ।
সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: আহমেদ হোসাইন ছানু। উপদেষ্টা সম্পাদক: মোঃ রহমত আলী। উপদেষ্টা: মোঃ জাবেদুল ইসলাম। সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ রেজন মিয়া। কার্যালয়: উত্তর উল্যা, ভরতখালী, সাঘাটা, গাইবান্ধা। মোবাইল: 01701368008।
স্বত্ব সংরক্ষিত - ২০২৫