• মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন

পুরুষদের চলাফেরা: ইসলামিক নির্দেশনা ও গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির তুলনামূলক বিশ্লেষণ

ভারতীয় ইসলামি সম্পাদক / ২৪ Time View
Update : শনিবার, ১০ মে, ২০২৫

✍️ মাওলানা আজিজুর রহমান আল জলিলী
ঠিকানা: ছামালা, এংলার বাজার, বদরপুর, শ্রীভূমি, করিমগঞ্জ, আসাম।

ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যা মানুষের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা প্রদান করে। পুরুষদের চলাফেরা ও আচরণের ক্ষেত্রেও ইসলাম সুস্পষ্ট আদর্শ স্থাপন করেছে। অপরদিকে, আধুনিক গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থাও নাগরিকদের স্বাধীনতা, অধিকার ও দায়িত্বের উপর ভিত্তি করে গঠিত। তবে উভয় ব্যবস্থার মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য হলো—ইসলাম নৈতিকতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণকে অপরিহার্য মনে করে, আর গণতন্ত্র আইনের শাসনের উপর নির্ভর করে।

ইসলামে পুরুষদের চলাফেরা ও আচরণ:

১. দৃষ্টি সংযম ও পর্দার আদেশ
আল্লাহ তায়ালা পুরুষদের প্রথমে দৃষ্টি সংযম করার আদেশ দিয়েছেন:
“মুমিন পুরুষদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে।” (সূরা আন-নূর, আয়াত ৩০)
এখানে চলাফেরা ও সামাজিক উপস্থিতিতেও সংযমের শিক্ষা দেয়া হয়েছে।

২. সামাজিক ও পারিবারিক দায়িত্ব
ইসলামে পুরুষকে পরিবার ও সমাজের নেতা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত করা হয়েছে:
“পুরুষরা নারীদের উপর অভিভাবক, কারণ আল্লাহ একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন…” (সূরা আন-নিসা, আয়াত ৩৪)
তাই একজন পুরুষের চলাফেরায় দায়িত্বশীলতা, শিষ্টাচার ও সততা অপরিহার্য।

৩. অহেতুক চলাফেরা নিরুৎসাহিত
ইসলাম বিনা প্রয়োজনে বাইরে ঘোরাফেরা, আড্ডা বা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ নিষেধ করে। নবী করিম (স.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন অনর্থক কথা না বলে এবং অনর্থক ঘোরাফেরা না করে।” (সহীহ বুখারী)

গণতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ:

গণতান্ত্রিক সমাজে ব্যক্তি স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার। একজন পুরুষ নিজের ইচ্ছামতো যেকোনো স্থানে চলাফেরা করতে পারেন, যতক্ষণ না তা অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে বা আইনের পরিপন্থী হয়। তবে এখানে নৈতিকতা একটি ঐচ্ছিক বিষয়—আইনভঙ্গ না করলে অনৈতিক হলেও অনেক কিছু বৈধ রয়ে যায়।

তুলনামূলক মূল্যায়ন:

ইসলামে চলাফেরার নিয়ম কেবল আইনগত নয়, বরং আত্মিক ও নৈতিকও। অন্যদিকে গণতন্ত্র শুধুমাত্র বাহ্যিক নিয়ম-নীতির মাধ্যমে সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ইসলামী পদ্ধতিতে পুরুষের চলাফেরায় যে সংযম, মর্যাদা ও দায়িত্ববোধ আরোপ করা হয়, তা ব্যক্তি ও সমাজ উভয়ের জন্যই কল্যাণকর।

উপসংহার:

বর্তমান সময়ে যখন সামাজিক অবক্ষয় ও দায়িত্বহীনতার ছাপ স্পষ্ট, তখন ইসলামের নির্দেশনা অনুসরণ করাই হবে প্রকৃত মুক্তি ও শৃঙ্খলার পথ। গণতান্ত্রিক কাঠামোর আইনি সুবিধা তখনই সমাজে কার্যকর হবে, যখন তার সাথে ইসলামী নৈতিকতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ যুক্ত হবে।

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
bdit.com.bd