স্টাফ রিপোর্টার:
কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ এর সভাপতি সাবেক কর কমিশনার, ১২৬ তম নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান, রাস্ট্র চিন্তক ও সংস্কৃতজন মোঃ আসাদুজ্জামান বলেছেন ২৪ বিপ্লবোত্তর সময়ে বর্তমানে দেশ এক চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করেছে। তিনি বিশ্লেষণ করে বলেন তার অনয়তম কারণ হলো
একদিকে ভূরাজনৈতিক চাপ -প্রতিচাপ জাতিসংঘের প্রস্তাব- রোহিঙ্গা সমস্যার সর্বশেষ জটিল পরিস্থিতি
অন্যদিকে কেউ বলছেন সার্বভৌমত্বের হুমকি।
আবার পরাজিত পক্ষের সহিত আধিপত্যবাদি শক্তির সংশ্লেষ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংস্কার নিয়ে মতবিরোধ এবং করিডরের বাস্তবতাহীনতায় ধারণাপ্রসুত মতবিরোধ।
ক্ষেত্রবিশেষে নাগরিকগণ অধিকার ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার অভিভাবক বিচারালয়ে এবং আইনাঙ্গনে মব জাস্টিস লক্ষ্যনীয়।
সেনাপ্রধান মহোদয়ের কয়েকদিনের কর্মকাণ্ড ও অভিব্যক্তি। ইত্যাদি ইত্যাদি ঘটনা, রাস্তায় রাস্তায় দাবী-দাওয়া ও বিক্ষোভ। ইউটিউব ও টকশোতে নানারকম কথাবার্তা ,মতামত, ক্ষেত্রবিশেষে বিশোধগার সব মিলিয়ে জনমনে আতঙ্ক ও অনিশ্চিতা বিরাজ করছে।
সাধারণ মানুষ এতোকিছু জানতে চায়না বুঝতে চায়না।তারা ভিক্ষা নয় কাজ করে খেতে চায়,মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চায়,নিশ্চিন্তে রাতে ঘুমাতে চায়।
দেশের আমজনতার এসবের নিশ্চিয়তা বা গ্যারান্টি দেয়ার মালিক সরকার। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো বর্তমান উপদেষ্টা সরকার এসবের নিশ্চয়তা দিতে ব্যার্থ হয়েছে।
কেন সরকারের ব্যার্থতার কথা আসছে ? কারণঃ
১। অভ্যুত্থান বা বিপ্লের পরে সরকার গঠনে ত্রটি। উচিত ছিল বিপ্লবী সরকার গঠন করা এবং সংবিধানের গনবিরোধী কালো অনুচ্ছেদগুলো তাৎক্ষনিকভাবে বাতিল ঘোষণা পূর্বক শপথ নেয়া।
২অভিজ্ঞ,দক্ষ,দুরদর্শী,সৎ,সাহসী চৌকশ ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের নিয়ে সরকার গঠন করা উচিৎ ছিলো।কিন্তু দুঃখের বিষয় কয়েকজন বাদে অধিকাংশের দক্ষতার ব্যাপারে নাগরিকদের মধ্যে অসন্তুষ্টি ও অভিযোগ রয়েছে।
আরও পরিতাপের বিষয় বিভিন্ন মহলের বিভিন্ন সোসাল মিডিয়ায় এসব আলোচনা ও পরামর্শ
আসার পরও প্রধান উপদেষ্টা কান চোখ বন্ধ রেখেছেন বা উদাসীন থেকেছেন বা উপেক্ষা করেছেন।
৩। ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী অংশ ,দলীয় মন্ত্রী,এমপি,নেতাকর্মীদের ষড়যন্ত্রমূলক কৌশল,তাদের বন্ধুদেশ দিল্লির আধিপত্য বজায় রাখার উদগ্র বাসনা,কৌশল ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলার উপযুক্ত লোক নিয়োগে অপারগতা বা সদিচ্ছার অভাব।
৪। প্রধান উপদেষ্টাকে যে সমস্তপক্ষ সহযোগীতার কমিটমেন্ট করেছিলেন তাদের কারো কারো সাথে “কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট”এর কারণে তারা পিছুটান দেন এবং সরকারকে আপদ ভাবা শুরু করেছেন।
৫। যেহেতু বাংলাদেশ প্রোভিন্সিয়াল ফরমেট বা ফেডারেল কান্ট্রি নয়,ভাষা ও কালচার প্রায় একই রকম। আত্মীয়তার বন্ধনে জড়িয়ে আছে দলমত নির্বিশেষে সমগ্র জনগোষ্ঠীতে
সুতরাং এখানে অত্যন্ত সাবধানে আইন ,নীতিমালা এবং বাবস্থা গ্রহন করতে হবে।
নাগরিকগণ কোনটাকে দুর্নীতি মনে করে ,কোনটাকে মনে করে না এর সীমারেখা টানা মুশকিল হলেও কমনসেন্স এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে। মামলায় অযথা বেশি আসামী বানালে সত্যিকার অপরাধী সাব্যস্ত করা কঠিন হয়ে পরে।
দাগী দুর্নীতিবাজ,চোরাকারবারী,অর্থ পাচারকারী,গুম খুন হত্যা,গণহত্যা ইত্যাদির সঠিক ও আইনানুগ বিচার হতে হবে তবে ঢালাওভাবে আসামী বানানো যাবে না মিথ্যা মামলা রুজ্জু করা যাবে না। সেটা হচ্ছে বলে এন্তার অভিযোগ আছে।
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার উদ্দেশ্যে সর্বোগ্রাসী কর্মোকান্ডের মাধ্যমে মানুষের নৈতিকতা নষ্ট করে দিয়েছে(demoralized)। সৎ,দৃঢচেতা নীতিবান মানুষ সমাজে বর্তমানে খুঁজে পাওয়া দুঃষ্কর।
এহেন পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মডেল ফলো করে
“ট্রুথ এন্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন”
গঠন করে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় ভুলপথে পরিচালিত বা বিপথগামী অবৈধ সম্পদশালীদের কম্পেন্সেশন প্রদান সাপেক্ষে সমাজের মূলস্ট্রিমে কন্ট্রিবিউট করার সুযোগ করে দিতে হবে।
বাস্তবতা হচ্ছে আর্থিক অভিযোগসমূহ উপরি-উল্লেখিত উপায়ে নিরসন না করলে জেলে জায়গা দেবেন কিভাবে ,এতো জেলখানাই বা কোথায় পাবেন ?
আর জেলে পুরলেই কি সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে ?
সমাজের মূল্যবোধের জায়গাগুলোকে ধীরে ধীরে কৌশলে নষ্ট করা হয়েছে এবং এতে বিদেশি শক্তির হাত থাকা অস্বাভাবিক নয়।
গোচরে বা অগোচরেও এটা হতে পারে।
যাহোক, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সকল সচেতন নাগরিকের নিকট আবেদন
“ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়
দলের চেয়ে দেশ বড়। ” —
আসুন
সব মত পথ বিবাদ বিসম্বাদের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণকে আসস্ত করি দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সকলে সচেষ্ট হই।
মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন (আমীন)।